চট্টগ্রাম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক জাহিদ হোসেন মোল্লাকে ঘিরে ক্ষমতার অপব্যবহার, বদলি–বাণিজ্য, অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অস্বাভাবিক ভ্রমণসহ একাধিক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অধিদপ্তরের ভেতরে ও বাইরে এসব অভিযোগ নিয়ে তৈরি হয়েছে আলোচনার ঝড়।
অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জাহিদ হোসেন মোল্লা দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরীণ প্রশাসনে প্রভাব বিস্তার করে নিজের নেটওয়ার্ক শক্ত করেছেন। যাকে পছন্দ না হলে বদলি করে দেওয়া এবং পছন্দের কর্মকর্তাকে বিশেষ দায়িত্ব ও সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ করেন তারা। অনেকেই দাবি করছেন, বদলি–বাণিজ্যের কেন্দ্রেও তিনি জড়িত ছিলেন।
অস্বাভাবিক সম্পদ ও জীবনযাপন অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী তার ও তার পরিবারের নামে রয়েছে ঢাকার জাপান গার্ডেন সিটিতে একাধিক ফ্ল্যাট, মোহাম্মদপুরে নির্মাণাধীন বাড়ি, গ্রামের বাড়িতে দালানকোঠা ও বিপুল পরিমাণ জমি, পাশাপাশি উচ্চমূল্যের ব্যক্তিগত গাড়ি। কর্মকর্তাদের দাবি, তার জীবনযাপন ও সম্পদ আয়–ব্যয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
পাঁচ মাসে ৫০টিরও বেশি বিমান ভ্রমণ শুধু পাঁচ মাসে তিনি ৫০টিরও বেশি বিমানযাত্রা করেন। ঢাকা–চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বরিশাল, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, ফেনী, কুমিল্লা, লাকসামসহ বিভিন্ন রুটে এসব ভ্রমণের বেশিরভাগই বিমানযোগে হয়েছে বলে জানা গেছে। অধিদপ্তর তার এসব যাত্রার অনুমোদন বা খরচ সম্পর্কিত কোনো নথি দেখাতে পারেনি। ফলে এসব ব্যয়ের উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহারের অভিযোগ অধিদপ্তরের কিছু কর্মকর্তা দাবি করেন, জাহিদ হোসেন মোল্লা অতীতে রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠতা ও আত্মীয়তার প্রভাব ব্যবহার করে পোস্টিং, বদলি ও বিভিন্ন সুবিধা নিয়েছেন। ক্ষমতার পরিবর্তনের পরও তিনি প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শিক্ষাগত সনদ নিয়ে অসামঞ্জস্য তার এসএসসি সনদ যাচাই করতে গেলে যশোর বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট স্কুল প্রশাসন তথ্য দিতে অনাগ্রহ দেখিয়েছে বলে একাধিক সূত্র জানায়। এতে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
অধিদপ্তরের বেশিরভাগ কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে চান না। তাদের ভাষায়, “অপ্রিয় কিছু বললেই বদলি হওয়ার ভয় থাকে।” অভিযোগগুলো জানাতে চাইলে জাহিদ হোসেন মোল্লার পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।