সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৪০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ
বিজয় দিবসে বঙ্গভবনের আশপাশের সড়ক পরিহারের অনুরোধ ডিএমপির আইজিপির সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ হাদির হত্যাচেষ্টাকারীদের বিচার দাবিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা বিজয় দিবসে রাজধানীতে যান চলাচলে ডিএমপি’র বিশেষ নির্দেশনা বগুড়ার শেরপুরে খেঁজুরের রস পানে ৬ বছরের মাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যু সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় ১২০ গ্রাম হেরোইনসহ কিশোর আটক হাদির হামলাকারীদের পালিয়ে যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত না : বিজিবি ইন্দুরকানীতে নিষিদ্ধ শাপলা পাতা মাছ বিক্রির দায়ে তিন ব্যবসায়ীকে জরিমানা, লক্ষাধিক টাকার মাছ জব্দ ডেমরায় ৪২ কেজি গাঁজাসহ মাদক কারবারি গ্রেফতার ,পিকআপ জব্দ
নোটিশ:
তথ্য ও প্রচার মন্ত্রণালয় নিবন্ধনকৃত অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্য পিপলস্ নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকে সারা দেশে জেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হবে। মোবাইল: ০১৭১১-১১৬২৫৭, ০১৭১২-৪০৭২৮২ ' ই-মেইল : thepeopelesnews24@gmail.com

আল্লাহর ভালোবাসা লাভের ১০ আমল

অনলাইন ডেস্ক: / ৩০ বার দেখা হয়েছে
আপডেট : রবিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৫
-প্রতীকী ছবি।

আল্লাহর ভালোবাসা এমন একটি অফুরন্ত নিয়ামত, যা পেলে দুঃখ কেটে যায়, অন্ধকার আলোকিত হয়, হতাশ হৃদয় শান্তিতে ভরে ওঠে। তাই মুমিনের জীবনের শ্রেষ্ঠ লক্ষ্য হওয়া উচিত আল্লাহর মহব্বত অর্জন করা। কিন্তু আল্লাহ কাকে ভালোবাসেন? কোন কাজ মানুষকে আল্লাহর প্রিয় বান্দা বানায়? এ প্রশ্নের উত্তর কোরআন ও হাদিসে সুস্পষ্টভাবে এসেছে।

এক. অর্থসহ কোরআন পড়া।

যখন আপনি অর্থসহ কোরআন পড়বেন তখন আপনি অনুভব করবেন যে আল্লাহ আপনার কত আপন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি নাজিল করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসমূহ নিয়ে গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করে।’ (সুরা : সদ, আয়াত : ২৯)

দুই. ফরজ আদায়ের সঙ্গে নফল আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর ভালোবাসা লাভ হয়। হাদিসে কুদসিতে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ তাআলা বলেছেন, …‘আমার বান্দা ফরজ ইবাদতের মাধ্যমে আমার যতটুকু নৈকট্য লাভ করে, অন্য কোনো ইবাদতের মাধ্যমে ততটুকু পারে না (অর্থাৎ ফরজ হলো ভিত্তি)।

এরপর আমার বান্দা নফল ইবাদতের মাধ্যমে আমার এত বেশি নিকটবর্তী হতে থাকে যে এক পর্যায়ে আমি তাকে ভালোবেসে ফেলি। আর আমি যখন তাকে ভালোবাসি তখন আমি তার কান হয়ে যাই, যা দিয়ে সে শোনে; আমি তার চোখ হয়ে যাই, যা দিয়ে সে দেখে; আমি তার হাত হয়ে যাই, যা দিয়ে সে ধরে এবং আমি তার পা হয়ে যাই, যা দিয়ে সে চলাফেরা করে। সে যদি আমার কাছে কিছু চায়, আমি অবশ্যই তাকে তা দান করি। আর সে যদি আমার কাছে আশ্রয় চায়, আমি অবশ্যই তাকে আশ্রয় দিই।’(সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৫০২)

তিন. জিহ্বা ও অন্তর উভয় প্রকার জিকিরই আল্লাহর সর্বোচ্চ নৈকট্য ও ভালোবাসা লাভের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও সহজ মাধ্যম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমিও তোমাদের স্মরণ করব।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৫২)

চার. নিজের পছন্দের ওপর আল্লাহর পছন্দ প্রাধান্য দেওয়াই হলো আল্লাহর বন্ধু হওয়ার এবং তাঁর সর্বোচ্চ নৈকট্য লাভের চূড়ান্ত চাবিকাঠি। একে ইসলামের পরিভাষায় মুজাহাদাতুন নফস বা প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে লড়াই বলা হয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, তিনটি গুণ যার মধ্যে থাকবে সে ঈমানের প্রকৃত স্বাদ (মিষ্টতা) অনুভব করতে পারবে।

তার মধ্যে প্রথমটিই হলো, যার কাছে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল পৃথিবীর অন্য সব কিছুর চেয়ে বেশি প্রিয় হবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৬; সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪৩)

পাঁচ. আল্লাহর সুন্দর নাম (আসমাউল হুসনা) এবং তাঁর গুণাবলি জানা, বোঝা ও সেগুলো হৃদয়ঙ্গম করা, আল্লাহর নৈকট্য ও মারিফাত লাভের সবচেয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক ও শক্তিশালী মাধ্যম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহর ৯৯টি নাম আছে… যে ব্যক্তি এই নামগুলোকে ইহসা (মুখস্থ করবে, বুঝবে ও ধারণ করবে), সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৭৩৬)

ছয়. আল্লাহর প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য নেয়ামতগুলো নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করা এবং সেগুলো হৃদয়ঙ্গম করা, আল্লাহর ভালোবাসা ও নৈকট্য লাভের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আধ্যাত্মিক সাধনা। মানুষের সহজাত স্বভাব হলো, যে তার উপকার করে তাকে সে ভালোবাসে। তাই বান্দা যখন বুঝতে পারে যে তার জীবনের প্রতিটি নিঃশ্বাস, প্রতিটি মুহূর্ত এবং তার চারপাশের সব কিছুই আল্লাহর দয়া, তখন তার মন কৃতজ্ঞতায় নত হয়ে যায় এবং সে রবের প্রেমে পড়ে যায়। আল্লাহ তাআলা নিজেই মানুষকে তাঁর প্রকাশ্য ও গোপন নিয়ামতগুলো স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, যাতে মানুষ তাঁকে চিনতে পারে।

আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমরা কি দেখো না যে আল্লাহ আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে, সবই তোমাদের কাজে নিয়োজিত করে রেখেছেন এবং তোমাদের প্রতি তাঁর প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য নিয়ামতসমূহ পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন? (সুরা : লোকমান, আয়াত : ২০)

সাত. বিশেষ বিশেষ রহমতের সময়ে যখন আল্লাহ তাআলা বান্দার অতি কাছে চলে আসেন, তখন জাগতিক কোলাহলমুক্ত হয়ে তাঁর সঙ্গে একান্তে মিলিত হওয়া চাই। জিকির, আরজি-মিনতি ও কোরআন তিলাওয়াতে নিজেকে ডুবিয়ে রাখতে হয়। কায়মনোবাক্যে দাসত্বের সব আদব রক্ষা করে তাঁর অভিমুখী হওয়া এবং তওবা-ইস্তিগফারের অশ্রুতে সেই সময়গুলো সিক্ত করাই বাঞ্ছনীয়। এভাবেই একজন বান্দা আল্লাহর পরম সান্নিধ্য লাভে ধন্য হয়।

রাসুল (সা.) বলেছেন, প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আমাদের রব দুনিয়ার আসমানে নেমে আসেন এবং ডাকতে থাকেন, ‘কে আছ আমাকে ডাকবে? আমি তার ডাকে সাড়া দেব। কে আছ আমার কাছে চাইবে? আমি তাকে দান করব। কে আছ আমার কাছে ক্ষমা চাইবে? আমি তাকে ক্ষমা করব। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১১৪৫)

আট. আল্লাহর জন্য ভালোবাসা এবং আল্লাহর জন্য ঘৃণা এটি ঈমানের পূর্ণতার পূর্বশর্ত এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের সবচেয়ে মজবুত সিঁড়ি। আবু উমামা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য ভালোবাসবে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দুশমনি করবে; আর দান করবে আল্লাহর জন্য এবং দান করা থেকে বিরত থাকবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য, সে ব্যক্তি তার ঈমান পরিপূর্ণ করেছে।

নয়. সত্যবাদী ও আল্লাহপ্রেমিকদের সাহচর্যে থাকা এবং তাঁদের সঙ্গে উঠাবসা করা। ফলের বাগান থেকে যেমন শুধু উত্কৃষ্ট ফলটিই চয়ন করা হয়, তেমনি তাঁদের বাণী থেকে উত্তম কথাগুলো নিজের পাথেয় হিসেবে সংগ্রহ করা। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সৎ সঙ্গীর উদাহরণ হলো আতর বিক্রেতার মতো। সে যদি তোমাকে আতর নাও দেয়, তবু তুমি তার পাশে থাকলে সুঘ্রাণ অবশ্যই পাবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৫৩৪)

দশ. যেসব বিষয় আল্লাহ তাআলা ও বান্দার অন্তরের মাঝে আড়াল বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, সেগুলো থেকে পুরোপুরি বিরত থাকা।

(মাদারিজুস সালেকিন অবলম্বনে)


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর